বিশেষ প্রতিনিধি:সৃষ্টি-সংগ্রামে ও মননে এক অনন্য বাঙালি শিরীন আখতার। তাঁর সৃষ্টিজগৎ বিশাল ছিল বলেই একজন সফল সংগঠক হিসেবে কর্মজীবী নারীদের জন্য অবিরাম কাজ করতে পেরেছেন। দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে তিনি জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাঃ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও এবার আওয়ামী লীগের নিজ দলীয় প্রার্থী প্রদানের কারণে তিনি আর এগুতে পারেন নি। বর্তমানে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদে এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। উল্লেখ্য, শিরীন আখতার নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বহুমাত্রিক মুক্ত ও প্রগতিশীল চেতনার ধারক ও বাহক হিসেবে সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রাম ও খাঁটি বাঙালিত্ব অর্জনের সাধনাই ছিল শিরীন আখতারের একমাত্র ব্রত।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি আওয়ামী লীগের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় ফুলগাজী এলাকায় সরকারি বরাদ্দ হাজীর ভাগনা সেতু ও ছাগলনাইয়া মহামায়া সেতু, পরশুরামের মুহুরি নদীর উপর কুন্ডারপাড় সেতু নির্মাণ ছিল উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েল, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক ভাতা, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে মুন্সীরহাটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন ভবন নির্মাণও কেউ ভুলবে না। ২৫ মার্চ গনহত্যা দিবসটি সরকারি স্বীকৃতি আদায়ে জাতীয় সংসদে পাশ করা ছিল তার অতুলনীয় প্রচেষ্টার অনন্য স্বাক্ষী।
জীবন সায়াহ্নে এসে আজও মুক্তচিন্তা ও অসাম্প্রদায়িকতার আদর্শ থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হননি। অর্থ, ক্ষমতা, লোভ-লালসার প্রতি বরাবরই ছিলেন নির্মোহ। মানবকল্যাণ ও সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ শিরীন আখতার ষাটের দশকে এসে রাজনীতি শুরু করে তিনি কখনো রাজনীতিবিমুখ হননি। আজও তাঁর জীবনের অন্যতম অবলম্বন রাজনীতি ও সমাজ ভাবনা।
একাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য শিরীন আখতার সম্পর্কে জানতে চাইলে ফেনী জেলা জাসদের সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল আমিন বলেন, শিরীন আখতার ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশ ছাত্র লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন এবং সর্বশেষ ছাত্র লীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে তিনি প্রথম কাতারে ছিলেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি জেলও খেটেছেন। পরবর্তী পর্যায়ে তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘ ১০ বছরেরও অধিককাল অত্যান্ত সুনাম ও দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন করছেন।পরবর্তী পর্যায়ে এমপি হিসেবে আদর্শিক রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে এলাজায় সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এবং তার নির্বাচনী এলাকার বড় বড় ব্রিজ,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণসহ রাস্তা- ঘাট এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে এলাকার জনগণের দীর্ঘদিনের দাবীগুলো পূরণ করেছেন।নির্বাচনী এলাকায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন।সার্বিকভাবে জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তিনি সম্পূর্ণ সফল বলে আমি মনে করি।ছাগলনাইয়া উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সরকার সোহাগ বলেন,শিরীন আখতার দীর্ঘদিন যাবত রাজনীতি করেন।রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সমাজ বদলের যে গল্প নারী জাগরণের অগ্রদূত।তিনি সমাজের শুষিত বঞ্চিত নির্যাতিত মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
জনগণ দেখেছে গত ১০ বছর ফেনী-১ (ছাগলনাইয়া,ফুলগাজী ও পরশুরাম) আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।এ প্রতিনিধিত্ব করাকালে তিনি পুরো ১ আসনের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করে এলাকার চিত্র পাল্টে দিয়েছেন।তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শান্তি এবং সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্হাপন করলেন।আগামী প্রজন্মের কাছে ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবেন শিরীন আখতার।